উদযাপিত সফর সম্পর্ককে দৃঢ়তর করছে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে, যা তার 24 বছরে প্রথম সফর। এই সফর দুটি পারমাণবিক সশস্ত্র জাতির মধ্যে গভীর সম্পর্কের প্রতীক। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন যখন তিনি সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে সফর করেছিলেন, যা 2019 সালের পর প্রথমবার তাদের মধ্যে আলোচনা।
ক্রেমলিন এবং KCNR ঘোষণা
ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিনের ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অফ কোরিয়া (DPRK) সফর 18-19 জুন অনুষ্ঠিত হবে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা KCNR এই সফরের ঘোষণা দিয়েছে, তবে আরও কোনো বিবরণ দেয়নি।
Table of Contents
পুতিনের পূর্বের সফর এবং কূটনৈতিক ইতিহাস
পুতিন সর্বশেষ জুলাই 2000 সালে পিয়ংইয়ং সফর করেছিলেন, যা তার প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার চার মাস পর, এবং তখনকার নেতা কিম জং ইল, কিম জং উনের পিতার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। রোডং সিনমুন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি চিঠিতে, পুতিন রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে গত 70 বছরে সমানতা, পারস্পরিক সম্মান ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে সম্পর্ক এবং অংশীদারিত্বের বিকাশের উপর জোর দেন।
অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা
পুতিন পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীন বাণিজ্য এবং পারস্পরিক নিষ্পত্তির বিকল্প পদ্ধতি উন্নয়নের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন এবং একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কথা বলেন। তিনি রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় উত্তর কোরিয়ার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং “মার্কিন চাপ, ব্ল্যাকমেল এবং সামরিক হুমকির” বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ংকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
অস্ত্র বাণিজ্য নিয়ে উদ্বেগ
উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য গোলাবারুদ সরবরাহ করছে বলে উদ্বেগ বাড়ছে, এর বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার সামরিক আধুনিকীকরণ কর্মসূচির জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা ও প্রযুক্তি স্থানান্তর পেতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
সিউলের ইহা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অধ্যয়নের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলি মন্তব্য করেছেন, এই সফর উত্তর কোরিয়ার আন্তর্জাতিক মর্যাদা বাড়াচ্ছে এবং কিমের অভ্যন্তরীণ বৈধতাকে শক্তিশালী করছে। যদিও রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে চীনকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না, মস্কোর সাথে বাড়তি সহযোগিতা পিয়ংইয়ংকে আরও বিকল্প দেয়।
অস্ত্র বাণিজ্য লঙ্ঘন সম্ভাবনা
উত্তর কোরিয়ার সাথে অস্ত্র বাণিজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাব লঙ্ঘন করবে, যা রাশিয়া (একটি স্থায়ী সদস্য) পূর্বে সমর্থন করেছিল। তবে উভয় দেশই অস্ত্র স্থানান্তরের কথা অস্বীকার করেছে। সিউলের কুকমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেই লানকভ বলেছেন, উত্তর কোরিয়া রাশিয়া থেকে আরও উন্নত অস্ত্র পেতে চায় এবং তার বিনিময়ে আর্টিলারি গোলাবারুদ এবং স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারে।
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রচার
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রচারে সচেষ্ট হয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ উল্লেখ করেছেন যে সফরের সময় নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যত সহযোগিতার উপর একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
প্রতিনিধিদল এবং এজেন্ডা
এই সফরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলাউসোভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক থাকবেন। বুধবার মূল বৈঠকগুলি নির্ধারিত হয়েছে, এবং স্যাটেলাইট চিত্রগুলি নির্দেশ করে যে পিয়ংইয়ংয়ের কেন্দ্রস্থলে একটি সামরিক প্যারেডের প্রস্তুতি চলছে। সফর শেষে পুতিন ভিয়েতনামে যাবেন।
FAQs
1. উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশ্যে পুতিনের সফরের কারণ কী?
উত্তর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই সফরের মূল কারণ হল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
2. পুতিন কতদিনের জন্য উত্তর কোরিয়া সফর করছেন?
উত্তর: উত্তর কোরিয়া সফর 18-19 জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
3. পুতিনের পূর্ববর্তী সফর কবে হয়েছিল?
উত্তর: ২০০০ সালের জুলাই মাসে উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন।
4. এই সফরের সময় কি কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন যে সফরের সময় নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যত সহযোগিতার উপর একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
5. পুতিনের সফরের সময় কোন কোন রুশ কর্মকর্তা তার সাথে থাকবেন?
উত্তর: পুতিনের সফরে তার সাথে থাকবেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলাউসোভ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক।
6. পুতিনের সফরের প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হল রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করা, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং পারস্পরিক নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা করা।
7. এই সফর কি আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই এই সফরের আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
8. এই সফরের সময় কি কোনো সামরিক প্রদর্শনী হবে?
উত্তর: স্যাটেলাইট চিত্রগুলি থেকে জানা গেছে যে পিয়ংইয়ংয়ের কেন্দ্রস্থলে একটি সামরিক প্যারেডের প্রস্তুতি চলছে, যা পুতিনের সফরের সময় অনুষ্ঠিত হতে পারে।
9. পুতিনের পরবর্তী গন্তব্য কোথায়?
উত্তর: পিয়ংইয়ং সফর শেষে ভিয়েতনামে যাবেন।
10. উত্তর কোরিয়ার সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের ইতিহাস কী?
উত্তর: রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক গত 70 বছর ধরে সমানতা, পারস্পরিক সম্মান এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে বিকাশ লাভ করেছে।
আরো জানুন – ভালো শিক্ষার মূল কথা: সাফল্যের কৌশল